মানব দরদী সরকারের অমানবিক দপ্তর !! - Songoti

মানব দরদী সরকারের অমানবিক দপ্তর !!

Share This

বার্তা প্রতিবেদন, কলকাতাঃ আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর চিন্তাভাবনা যে কোন ক্ষেত্রেই  কর্মরত কোন ব্যক্তির চাকরি যেন না যায়। মাননীয়ার এই সুচিন্তাভাবনাকে রাজ্যের কারিগরি দপ্তর মানছে কোথায় !! 2013 সাল থেকে চালু হওয়া NVEQF(বর্তমানে NSQF নামে প্রচলিত) Pilot Project বর্তমানে স্কিমে রূপান্তরিত হয়েছে। সমগ্র শিক্ষা অভিযান এর আওতায় স্কুল শিক্ষা দপ্তরের মাধ্যমে পরিচালিত হলেও অজ্ঞাত কারণে কারিগরি দপ্তরে স্থানান্তরিত হয়। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত 13 টি বিষয় (IT, Retail, Automotive, Security, Health care ইত্যাদি) প্রায় ১৩৮০ জন শিক্ষক শিক্ষিকা  এবং  ১৪০ জন  ল্যাব

 এটেনডেন্ট এর সহায়তায় পড়ানো হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৭২৬ টি বিদ্যালয়ে  মাধ্যমিক স্তরে (মধ্যশিক্ষা পর্ষদ দ্বারা পরিচালিত) বিষয় গুলি অতিরিক্ত বিষয় হিসেবে থাকে, উচ্চ মাধ্যমিক (উচ্চমাধ্যমিক কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত) স্তরে প্রথম ৫ সাবজেক্টের মধ্যে এই বিষয়গুলি পরিগণিত হয়। সাত বছর বা চার বছর ধরে পড়ানো অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কর্মজীবন আজ অনিশ্চয়তার মুখে। দপ্তর থেকে সদ্য প্রকাশিত (18.01.2021) একটি টেন্ডারের নোটিশের মাধ্যমে বলা হচ্ছে নতুন করে শিক্ষক শিক্ষিকা (Vocational trainer) নিয়োগের কথা এবং সেখানে ল্যাব এটেনডেন্ট এর ব্যাপারে কোনো উল্লেখ নেই।

আগামী মার্চ মাসের পর সেই সমস্ত অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের এবং ল্যাব এটেনডেন্ট দের কর্মজীবনের ইতি হতে চলেছে। এই স্কিম এর উদ্দেশ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর ছাত্রছাত্রীরা নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা লাভ করে যাতে কর্মমুখী হয়ে উঠতে পারে অথবা তারা চাইলে উচ্চশিক্ষা লাভের দিকেও যেতে পারেl সেই উদ্দেশ্য বাস্তবে রূপায়নের ক্ষেত্রে যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা সবথেকে যোগ্য তাদেরকে বাদ দিতে চাইছে দপ্তর। Covid-19 পরিস্থিতিতে প্রতিদিন বিনা পারিশ্রমিকে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে অনলাইন ক্লাস চালিয়ে গেছেন তারা। সেই সময় তাদের মধ্যে এরকম কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছিলেন যাদের সাত মাস পর্যন্ত বেতন হয়নি।

আসন্ন মাধ্যমিক পরীক্ষায় যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে চলেছেন 2 বছর হয়ে গেলেও দপ্তর তাদের জন্য কোন পাঠ্য বইয়ের ব্যবস্থা করে উঠতে পারিনি এখনো। সেই ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে এসেছেন এই সমস্ত অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তারা নিজেদের ছাত্র-ছাত্রীদের কথা মাথায় রেখে দিনরাত খেটে তৈরি করেছেন বিভিন্ন ধরনের নোটস,স্লাইড, audio, video। স্কুল শিক্ষা দপ্তর যেভাবে অভিজ্ঞতার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় আমাদের রাজ্যে পরিচালনা করে থাকেন সেই অভিজ্ঞতা দেখাতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে এই কারিগরি দপ্তরl তবুও স্কুল শিক্ষা দপ্তর দ্বারা পরিচালিত হওয়ার বদলে এই বিষয়টিকে তারা নিজেরা আঁকড়ে ধরে বসে রয়েছেন। কিসের স্বার্থে!! Training Provider(TP) নামক কিছু ব্যক্তিগত সংস্থান এর ভালো হচ্ছে এবং হয়ে আসবে কিন্তু প্রকল্পটি যাদের উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছে সেই ছাত্র ছাত্রীরা তাদের প্রাপ্য থেকে দিনের-পর-দিন বঞ্চিত হয়ে আসছে। TP দের ওপর বর্তানো বেশ কিছু দায়িত্ব যেমন-Guest lecturer, Industry visit ইত্যাদি পালন করতে হয় এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের, সেইগুলি একপ্রকার জোর করেই চাপিয়ে দেন এই ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান সংস্থাগুলিl বহু বিদ্যালয় বিগত দু'বছর ধরে চলতে থাকা এই স্কিমের জন্য প্র্যাকটিক্যালের ল্যাব পর্যন্ত এখনো তৈরি হয়নি, ছাত্র-ছাত্রীরা পায়নি বই এবং অন্যান্য মেটেরিয়ালl সেই কথা কারিগরি দপ্তরে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান এবং এই বিষয়ের সরাসরিভাবে যুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা কারিগরি দপ্তরে জানানোর পরেও সমাধান পাওয়া যায়নি, যা পাওয়া গেছে তা হলো ঘুরপথে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে দ্বারা নিযুক্ত Coordinator ধমক সাথে চাকরি কেড়ে নেওয়ার হুমকিl প্রকল্পের উন্নতি সাধন করতে হলে সরাসরি স্কুল শিক্ষা দপ্তর এই বিষয়টি নিয়ে দেখাশুনা করুক, অন্যথায় স্কুল শিক্ষা দপ্তরের নিজস্ব বিষয়কে খুব যত্নসহকারে কারিগরি দপ্তর তিলে তিলে শেষ করে দিতে চলেছেl স্কুল শিক্ষা দপ্তর, কারিগরি দপ্তর, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চ মাধ্যমিক কাউন্সিল বিভিন্ন জায়গায় চিঠির পাঠিয়েও এই সমস্যার কোন সমাধান বা কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নিl

ফলপ্রসূ NSQF এর শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য মাঝখানে কারিগরি দপ্তরকে না রেখে সরাসরি স্কুল শিক্ষা দপ্তর থেকে এই স্কিম পরিচালনা করা হোক এবং স্কিমের আসল উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে কর্মরত শিক্ষক শিক্ষিকাদের যে যেখানে আছেন সেখানেই কাজ করতে দেওয়া হোক contractual কর্মীদের প্রাপ্য সমস্ত সুযোগ সুবিধা সহl 

আমাদের রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে NSQF পরিবারের পক্ষ থেকে একটাই আবেদন আপনি বিষয়টি নিয়ে প্রত্যক্ষভাবে দেখুন এবং অন্যান্য বিভিন্ন দপ্তরের(IT personal, ICT) কর্মীদের কর্মজীবন 60 বছর পর্যন্ত সুরক্ষিত করেছেন ঠিক সেইরকম এই স্কিমে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জীবন সুনিশ্চিত করার সাথে সাথে আমাদের আগামী প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতও সুরক্ষিত করুনl

No comments:

Post a Comment