দেবপ্রিয় মণ্ডল, কলকাতাঃ সাহিত্যের কোনো জাতপাত নেই, নেই দেশ-কাল-সময়-সীমানা-লিঙ্গভেদ। তাই প্রয়োজন সাহিত্য ও সামাজিক মুক্তচিন্তা। এই বার্তা নিয়েই গত ২০ অগাস্ট সল্টলেকের রবীন্দ্র ওকাকুরা ভবনে পথ চলা শুরু করল একটি দ্বিভাষিক ও দ্বিবার্ষিক ম্যাগাজিন, লিট্ইনফিনিট। অধ্যাপক শ্রীতন্বী চক্রবর্তী সম্পাদিত লিট্ইনফিনিট প্রধানত সমকালীন সাহিত্য, সমাজবিজ্ঞান, ভাষা, নানাবিধ বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে প্রকাশিত হয়েছে। লিখেছেন ভারত, বাংলাদেশ, জাপান ও নাইজেরিয়া থেকে বিভিন্ন প্রাবন্ধিকেরা। সূচিপত্র জুড়ে রয়েছে কবিতা, ছোটগল্প, দ্বিভাষিক ফিচার ও সাক্ষাৎকার। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কবি ও পশ্চিমবঙ্গ কবিতা একাডেমির চেয়ারম্যান সুবোধ সরকার। তিনি পত্রিকার বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করেন এবং বাঙালির সাংস্কৃতিক চেতনা কিভাবে সমকালীন সাহিত্যে বাংলা এবং ইংরেজি ভাষার মধ্যে দিয়ে প্রতিফলিত হচ্ছে তা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা ছিলেন কবি ও ঔপন্যাসিক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি মৃদুল দাশগুপ্ত , প্রখ্যাত লেখক-সাংবাদিক অমিতাভ সিরাজ, লেখক সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়, এবং শিল্পী সুব্রত
গঙ্গোপাধ্যায়। সকলেই তুলে ধরেন পত্রিকাটির পরিবেশন ও পরিকল্পনার দিকটি। কবি মৃদুল দাশগুপ্ত পাঠ করেন ‘জলপাই কাঠের এস্রাজ’। বলেন, কিভাবে যুগে যুগে, পৃথিবীর প্রতিটি কোনায় কোনায় কিছু মানুষ আজও কবিতা, গান, লেখালিখি, ছবি আঁকা নিয়ে খ্যাপামি করে চলেছে আর লিট্ইনফিনিট হয়তো সেই পাগলামিরই কিছু বিচ্ছুরণ। লেখক-সাংবাদিক অমিতাভ সিরাজকে তিনি এই জার্নালটিকে দশে কত নম্বর দেবেন, জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, 'দশে দশ, সামগ্রিক পরিকল্পনা এবং আজকের এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সুচারু সম্পাদনার জন্যে'। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক শ্রীতন্বী চক্রবর্তীর লেখা 'The Sleeping Beauty Wakes Up: A Feminist Interpretation of Fairy Tales' বইটিরও উদ্বোধন হয়। কিছু গল্প নারীবাদী ভাবনার আলোকে কিভাবে নারীসত্তাকে নতুন করে চরিত্রায়িত করেছে তা নিয়েই বইটি। ‘পোয়েট্রি সেশন’ চলাকালীন বিভিন্ন ভাষার কবিরা কবিতা পাঠ করেন। বর্ষণসিক্ত সন্ধ্যায় রূপান্তরকামী আইনজীবী মেঘ সায়ন্তনী ঘোষ এবং তার নৃত্যদল ‘রুদ্রপলাশ’ পরিবেশন করে নৃত্যনাট্য 'চিত্রাঙ্গদা'।
No comments:
Post a Comment