সীসাযুক্ত ব্যাটারি ব্যবহারে বাড়ছে বিপদ, বলছে গবেষণা - Songoti

সীসাযুক্ত ব্যাটারি ব্যবহারে বাড়ছে বিপদ, বলছে গবেষণা

Share This
দেবপ্রিয় মণ্ডল, কলকাতাঃ ভারতের চার রাজ্যের, যথা- দিল্লি, রাজস্থান (সহযোগী পর্যবেক্ষক ‘গ্রামীণ বিকাশ এবং পর্যাবরণ সংস্থা’), অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডে (সহযোগী পর্যবেক্ষক ‘লোক স্বর’) সম্পদের পুনর্নবীকরণের উপর পর্যবেক্ষণ করে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্যের হদিশ পেয়েছে টক্সিকস্‌ সলিউশনস। লেড ব্যাটারি দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময় পরে অকেজো হয়ে যাওয়ার পর এগুলি যায় কোথায়? দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ব্যাটারিগুলিকে নিয়ে যাওয়া হয় ভাটিতে এবং সরাসরি পুড়িয়ে তা থেকে সীসা বের করে নেওয়া হয়। ব্যাটারি আইনে প্রস্তুতকারীর দায়বদ্ধতা সম্পর্কে বলা আছে প্রস্তুতকারী সংস্থাকে মেয়াদোত্তীর্ণ ব্যাটারির ৯০শতাংশ সংগ্রহ করতে হবে। অথচ কোম্পানিগুলির দেওয়া অসম্পূর্ণ তথ্যের কারণে এবং ই. ও. এল. ব্যাটারির বহুল ব্যবহারের জন্য এই আইন লাগু করা যাচ্ছে না। টক্সিক লিঙ্কএর গবেষক প্রীতি মহেশ বলেন, “এই আইনের ফাঁক রয়েছে এখানেই। ১৮বছর ধরে এই সমস্যাটা রয়েছে”।
সংস্থার গবেষণা বলছে সীসা নিষ্কাশনের জন্য নূন্যতম বিধিনিষেধও মানা হচ্ছে না। কর্মীদের দেওয়া হয় না গ্লাভস, মাস্ক, অ্যাপ্রন বা জুতো। দিল্লির একটি ট্রিটমেন্ট সেন্টারের কর্মীদের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা যাচ্ছে তাদের প্রত্যেকের রক্তে সীসার পরিমাণ অনেক বেশি। খোলা জায়গায় পোড়ানো এবং নাড়াচাড়া করার জন্য সীসা মিশছে বাতাসে ও মাটিতে। ডাক্তাররা বলছেন সীসা শরীরে প্রবেশ করলে হতে পারে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন দূরারোগ্য রোগও। যদিও আইনে বলা নেই উপভোক্তা মেয়াদ শেষ হলে ব্যাটারিগুলিকে কি করবেন, নেই সচেতনতাও। এখানেই রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের খামতি থেকে যাচ্ছে। ৩৬টি এজেন্সির মধ্যে ৫০শতাংশ ক্ষেত্রেও মানা হচ্ছে না নিয়ম। সংস্থার সহঅধিকর্তা সতীশ সিংহ বলছেন, “ভারতের বিভিন্ন শহরেই সীসার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রকোপ বাড়ছে রাত বাড়লেই”।

২০১৬ সালে ভারতীয় বাজারে সীসা ব্যাটারিতে মুনাফা ছিল ৪.৪৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশেষজ্ঞদের মতে ২০২২ সালে এই মুনাফাই ৮.৩৬শতাংশ বেড়ে দাঁড়াবে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। বেশিরভাগ সীসা ব্যাটারি ব্যবহৃত হয় স্থায়ী ও অস্থায়ী সিস্টেমে। ইউপিএস ও ইনভার্টারের ব্যাটারি হিসাবে ৬০শতাংশ সীসা ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। সোলার সিস্টেম ও ইলেকট্রিক ব্যাটারিকার এসে যাওয়ায় এই ব্যবহার বেড়েছে কয়েকগুণ। সূত্র বলছে, সীসা ব্যাটারি ব্যবহারের ফলে সমস্যায় পড়ছেন দশ লক্ষ মানুষ। উলটোদিকে সঠিক পদ্ধতিতে সীসা নিষ্কাশন করলে অনেক বেশি পরিমাণে সীসা পাওয়া যাবে। অধিকর্তা রবি আগরওয়াল বলছেন, “ডিলাররা এবং ব্যাবসায়ীরা যে পরিমাণ ব্যাটারি ফেরত আসছে তাইই সংগ্রহ করছেন। এই চেনটাকেই আরও ভালভাবে সংগঠিত করে আরও বেশি সংখ্যক ব্যাটারি সংগ্রহ করা সম্ভব। এব্যাপারে আমাদের আরও সচেতন হওয়া উচিৎ”।

No comments:

Post a Comment