অসময়ে অকালবোধনের গল্প সৃজিতের উমা - Songoti

অসময়ে অকালবোধনের গল্প সৃজিতের উমা

Share This
সপ্তর্ষি সিংহ, ককলকাতাঃ বাঙালির শারদোতসবের অপেক্ষা আর কয়েক মাস। কিন্তু পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের মাধ্যমে দূর্গাপূজোর ঢাকে কাঠি। অসমাপ্ত এক না বলা গল্প সৃজিত দর্শকদের উপহার দিলেন উমা। ২০১৫ সালে কানাডার সেন্ট জর্জ শহরে সাত বছর বয়সী ইভান লিভারসেজ ও তার নিকোল ওয়েলউডের কাহিনী তুলে ধরলেন উমার মাধ্যমে।নিজের ওপর বিশ্বাস ও ইচ্ছাপূরনের স্বপ্নের জাল বুননের প্রয়াস ধরা পড়েছে বাবা ও মেয়ের মধ্যে। ইভানের মারনরোগে বড়দিন দেখে যেতে পারেনি আর সেই ঘটনাকে তুলে ধরা হয়ছে প্রেক্ষাপটে। সৃজিতের কাহিনীতে উমা(সারা)ও বাবা হিমাদ্রী(যীশু)বিদেশে থাকেন। মারন রোগে আক্রান্ত উমা। শৈশবেই মা মেনকা(সায়ন্তিকা)পরিবার ছেড়ে চলে যান। বাবার মুখে সে দূর্গাপূজোর গল্প শুনলেও সে কখনও চাক্ষুশ করেনি। কিন্তু মারনরোগের ফলে ডাক্তার জানিয়ে দিয়েছেন অক্টোবর পর্যন্ত তার হাতে সময় নেই। অতএব মেয়ের শেষ ইচ্ছা পূরনের উদ্দ্যেশে হিমাদ্রির যুদ্ধ শুরু। সেই লক্ষ্যে কলকাতায় এসে নকল দূর্গাপূজো তৈরী যে দুঃস্বাধ্য কাজ সেটাই প্রমান করেছেন। এদিকে ইন্ডাস্ট্রি থেকে হারিয়ে যাওয়া ব্রক্ষানন্দ চক্রবর্তী(অঞ্জন দত্ত) উমার ইচ্ছাপূরন এর সাথে নিজের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার এর লড়াই দানা বেঁধেছে।এর পাশাপাশি প্রডোকশন ম্যানেজার গোবিন্দ(রুদ্রনীল ঘোষ),উঠতি অভিনেত্রী মারিয়াম(শ্রাবন্ত)এবং পাড়া প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে মহড়ায় সাহায্য করেন। ছবিতে রয়ছে কট্টর হিন্দুত্ববাদী মহিতোষ সূরের(অনির্বান) চোখরাঙানি। সৃজিতের অকালবোধনের করুন সুরের আড়ালে লুকিয়ে রয়ছে এক রুপকথা। এই রুপকথা আমাদের ভাবতে শেখয়। আর সেই চিত্রটার উত্তর পর্দায় তুলে ধরলেন স্বয়ং পরিচালক। ছবিতে বাবার চরিত্রে যীশু অসাধারণ অভিনয় করেছেন। তবে দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে এক বাঙালি পাগল পরিচালকের চরিত্রে অঞ্জন দত্তের অভিনয়।আর উমার ভূমিকায় যীশুর বড় মেয়ে সারার অভিনয় দারুন প্রশংসনীয়। পরিচালককে কুর্নিশ জানাতে হয় স্বল্প চরিত্রে বিভিন্ন ভূমিকায় গোটা টলিউডের কলাকূশলীদের এই ছবিতে মিলিত করেছেন।শুধু ছবিতে অভিনয় নয় পাশাপাশি অনুপমের গান কিংবা সৌমিকের ক্যামেরা এক সুতোয় গেঁথেছে। নানান বাধা পেরিয়ে উমার দূর্গাপূজো দেখা সম্ভব? আদৌ কী কলকাতায় নকল দূর্গাপূজোর রুপ তৈরী হল?ছবির ক্লাইম্যাক্সে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চোখ রাখতে দেখতে হবে উমা। ছবি শেষে বাড়ির পথে যেতে যেতে বাঙ্গালী দর্শকের মনে হবে অনেকদিন পর একটা ভালো ছবি উপহার সৃজিতের।।

No comments:

Post a Comment