সৌমী সেন : কথায় বলে শিক্ষা সংস্কৃতির এক অনন্য পীঠস্থান প্রসার ভারতী। প্রসার ভারতীর তত্ত্বাবধানে কলকাতা দূরদর্শন এবং আকাশবাণী কলকাতা। আকাশবাণী কলকাতা তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকটি মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল। তার মধ্যে অন্যতম ছিল নাট্যনির্ঝর ।
সম্প্রতি জি ডি বিড়লা সভাঘরে এক অপূর্ব নাটকীয় সন্ধ্যার উপহার দিয়েছিল প্রসার ভারতী। যার পোশাকি নাম "নাট্যনির্ঝর " । অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন পূর্বাঞ্চলের অনুষ্ঠান বিষয়ক আঞ্চলিক প্রধান শ্রী রাজিব ভট্টাচার্য এবং প্রারম্ভিক ভাষণে ছিলেন শ্রী শুভ্র কমল মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। তার ভাষণের মূল বিষয় ছিল জি-টয়েন্টি বসুধৈব কুতুম্বকম। এছাড়াও সুস্থায়ী অর্থ ব্যবস্থা বিষয়ক বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। এরপর আসে সেই বহু প্রতীক্ষিত নাটক দেখার পালা। প্রথমেই শ্রুতি নাটকের মধ্য দিয়ে মঞ্চ মাতিয়ে তোলেন একদা আকাশবাণী এবং দূরদর্শন খ্যাত শিল্পী শ্রী জগন্নাথ বসু এবং উর্মিমালা বসু। এরপর
খরাজ মুখোপাধ্যায় এবং তার সহশিল্পীদের এক অনন্য উপস্থাপনা সবাইকে মুগ্ধ করে দেয়। এরপরেও ছিল আসল চমক। যাকে আমরা সারা জীবন নৃত্যশিল্পী হিসেবেই চিনে এসেছি, তার নৃত্য ভঙ্গিমায় আমরা অনবরত মুগ্ধ হয়েছি। এবার তাকে অন্যরূপে দেখার পালা। যদিও তিনি অভিনয় জগতে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন। এবার তিনি ধরা দিলেন শ্রুতি নাটকের মঞ্চে। তিনি হলেন মমতা শংকর। আর
তার সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দিলেন বর্ষীয়ান অভিনেতা শ্রী পরান বন্দ্যোপাধ্যায়। সবশেষে ছিল রয়াল ছৌএকাডেমীর বিশেষ ছৌ নিত্য প্রদর্শনী। এছাড়াও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। কুইজ ও তাৎক্ষণিক বক্তৃতায় বিজয়ী ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। একান্ত আলাপচারীতায় রাজীব ভট্টাচার্য জানালেন, জি-টোয়েন্টির মূল যে মন্ত্র বসুদেব কুটুম্বকম - এক পৃথিবী এক ভবিষ্যৎ এক পরিবার। এই ধারণাটা সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। ভারত বর্ষ জি 20 সভাপতিত্ব করছে এবং এর ফলে ভারত শুধুমাত্র কলকাতা নয়, উত্তর পূর্বাঞ্চল , ও
পশ্চিমাঞ্চলেও অনুষ্ঠান হচ্ছে এবং বিশেষ করে আকাশবাণী এর বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। রেডিও এবং দূরদর্শন এই দুটোরই শ্রোতা এবং দর্শক উভয়ই নিম্নমুখী - এর উত্তরে তিনি জানালেন বেশ কিছু অনুষ্ঠানের আবারও পুনরুদ্ধার করে নতুন ভাবে পরিবেশন করা হচ্ছে যার ফলে তারা অনেকটাই সাড়া পেয়েছেন দর্শক এবং শ্রোতার কাছ থেকে। তবে শ্রোতা বা দর্শক উভয়ই কমে যাওয়ার দরুন কিছুটা আক্ষেপের সুর তার গলায় শোনা গেলেও আগামী দিনে নতুন ভাবে বিস্তৃত হবে সেটা নিয়ে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান যে, আকাশবাণীতে মহালয়ার ভোরে যে মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠানটি হয় এটি কিন্তু এখন আর আকাশবাণীর অনুষ্ঠান নেই এটি সমগ্র সমাজের অনুষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং ঐদিন শ্রোতার বিপুল পরিমাণ চাহিদাও থাকে। তবে তিনি এটাও জানান ভারত জি-টোয়েন্টি সভাপতিত্ব করছে এবং যথেষ্ট সফলভাবে এটি পালন করছে এবং প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে অত্যন্ত সফলতার সাথে অনুষ্ঠিত হয়েছে। আকাশবানীর পক্ষ থেকে সমগ্র অনুষ্ঠানটির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন শ্রীমতি অনন্যা মজুমদার | সব মিলিয়ে বর্ষণ সিক্ত সন্ধ্যেবেলায় নাটকের বর্ষণে ভেসে গেলাম আমরা |
No comments:
Post a Comment