কলকাতা: শিল্প-বাণিজ্যের ছকভাঙা চেষ্টায় উজ্জ্বল ছিল ইংরেজ আমলের বাংলা। সেই ইতিহাস এখন ধুসর অতীত। বাংলায় শিল্পের উত্থান-পতনের কাহিনি এবার TV9 বাংলার পর্দায়।
উনিশ শতকের বিশিষ্টজনেরাই ছিলেন শিল্পোদ্যোগ কান্ডারি। রবীন্দ্রনাথের ঠাকুরদা দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন ভারতের প্রথম পুরোদস্তুর শিল্পপতি। শিল্প-বাণিজ্যের এমন কোনও ক্ষেত্র নেই, যেখানে ছাপ রাখেননি তিনি। বন্ধু মদনমোহন তর্কালঙ্কারের সঙ্গে পার্টনারশিপে বিদ্যাসাগর খুলেছিলেন সংস্কৃত প্রেস ও ডিপজিটারি। আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের তৈরি বেঙ্গল কেমিক্যালস-এর ক্যান্থারাইডিন, ফিনল, অ্যাকুয়া-টাইকোটিসের মতো পণ্য মিশে গিয়েছিল সাধারণ বাঙালির জীবনে। আম বাঙালির জীবনের মিশে ছিল স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নবিদ্যা পড়ে আসা দেশপ্রেমী সুরেন্দ্রমোহন বসুর ডাকব্যাক, কিশোরীমোহন বাগচীর হাতে গড়া পিএম বাগচী। বাঙালি শিল্পোদ্যোগী আলামোহন দাশের নামে গঙ্গার পশ্চিম পাড়ের শহর, হাওড়ার দাশনগর। কিন্তু আলামোহন দাশের তৈরি প্রায় কোনও শিল্প আর টিকে নেই। আর এক প্রাক্তন এক বিপ্লবীর হাতে গড়া শিল্পসংস্থা কৃষ্ণা গ্লাসও অতীতের স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে।
স্বাধীনতার পর থেকে হুগলির হিন্দমোটর কারাখানা আর অ্যাম্বাসাডর গাড়ির ব্র্যান্ড ছিল সমার্থক। অতীত সেই রূপকথাও। হুগলির সাহাগঞ্জে ডানলপ কারখানাও ছিল বাংলার শিল্পের মুকুটে উজ্জ্বল পালক।সাইকেল থেকে বিমান-টায়ারের বাজারে এক সময় একচেটিয়া ছিল ডানলপ। কিন্তু এখন খণ্ডহরের মতো দাঁড়িয়ে ডানলপ কারখানা আর ডানলপ এস্টেট। বাংলার শিল্প-সরণিতে দমদমের জেসপ কারখানারও ছিল ঝকমকে উপস্থিতি। জেসপের কারখানা থেকেই বেরিয়েছিল ভারতের প্রথম বিদ্যুতিক মাল্টিপল ইউনিট রেল-কোচ। জেসপের দুশো বছর পেরোনো ইতিহাস থেকে সোনালি দাগ মুছে গিয়েছে সেই কবে। হুগলির দু-পাড়ে বন্ধ সারি সারি চটকল। কুলিলাইনে দারিদ্রের ঘুণপোকা।
বর্তমানে বাংলা বা বাঙালির শিল্পোদ্যোগের তাকালে হাতেগোনা কয়েকটি ক্ষেত্র ছাড়া সাফল্যের খতিয়ান আজ আর খুব বেশি নেই। তবে এখনও লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে গৌরমোহন দত্তের তৈরি জিডি ফার্মাসিউটিক্যালস-এর বোরোলিন। ২০০৬-২০০৭ সালে ফিরে এসেছে সুলেখাও। কালি নয়, গৃহস্থালিতে ব্যবহারের নানা দ্রব্য বাজারে নিয়ে এসেছে তারা। ২০২০-তে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে সুলেখা কালিরও। আঁধারের মাঝে ক্ষীণ আলো এখানেই। বাংলার শিল্পের আলো-আঁধার নিয়েই TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ বাংলার শিল্প-- সেকাল একাল আকাল। দেখুন রবিবার, ২৬ জুন রাত ১০টায় ।
No comments:
Post a Comment