৭৪তম স্বাধীনতা দিবস.....কি চেয়েছি আর কি যে পেলাম - Songoti

৭৪তম স্বাধীনতা দিবস.....কি চেয়েছি আর কি যে পেলাম

Share This

সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়ঃ রাত ১১.৫৮ মিনিট। ১৪আগস্ট।১৯৪৭। আজ থেকে ৭৪ বছর আগে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নির্দেশে লর্ড মাউন্টব্যাটেন নেহেরুজির হাতে তুলে দিলেন ভারত নামে দেশটির। হস্তান্তর প্রক্রিয়া মাত্র দু মিনিটের। রাত ১২টা বাজতেই বিশ্বের ইতিহাসে ঘটলো পট পরিবর্তন। সংক্ষিপ্ত ভাষণে নেহেরুজি বললেন,আজ গভীর রাতে মানুষ যখন ঘুমিয়ে, ইতিহাসে নতুন সন্ধিক্ষণ সূচিত হল। দেশের মানুষ জানলেন ভারত স্বাধীন হয়েছে। কিছুক্ষন আগেই ভারত নামে কেক টি কেটে আর এক উপনিবেশ পাকিস্থানের জন্ম হয়েছে।

দুই দেশে বসবাসকারী কিছু মানুষের চোখে ছিল আনন্দাশ্রু। আবার লক্ষ লক্ষ মানুষের চোখে বিষাদের অশ্রু। ছিন্নমূল হওয়ার অভিশাপ। এই সব পুরনো কাসুন্দি ঘেঁটে আবেগধর্মী  প্রতিবেদন লেখার প্রতিবেদকের অভাব নেই। এই কলমচি বরং আপনাদের কাছে একটু অন্যরকম প্রতিবেদন তুলে ধরতে চায়। এই মুহূর্তে মনে পড়ছে মান্না দে'র সেই গানটি। 'কি চেয়েছি আর কি যে পেলাম।'

স্বাধীনতার সংজ্ঞা অভিধানে যা লেখা আছে সেটা কি স্বাধীন দেশের নাগরিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?১৯৪৭এর পর কেটেছে ৭৪ টি বছর। এখনও দেশের অধিকাংশ মানুষ তাঁর নাগরিক অধিকার কি বা কতটা তার স্পষ্ট ধারণা থেকে বঞ্চিত। স্বাধীনতার সঙ্গে গণতন্ত্র শব্দটির একটা আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। ১৫আগস্ট স্বাধীনতা দিবস হিসেবে আমাদের কাছে যেমন গর্বের, ২৬ জনুয়ারি তেমন সাধারণতন্ত্র দিবস হিসেবে। অথচ সেই গণতন্ত্র আমাদের দেশে কতটা অপুষ্টিতে ভুগছে সেটা যেন ভুলেই থাকতে চাই। মনে পড়ে রবি ঠাকুরের সেই গান। 'তোমার পূজার ছলে তোমায় ভুলেই থাকি।' আসলে গণতন্ত্র কাহারে কয় আমাদের কাছে অস্বচ্ছ থেকে গেছে। গ্রিক ডেমস শব্দের অর্থ জনগন। আর ক্র্যাসি শব্দের অর্থ তন্ত্র। তিনটি মাত্র অক্ষরের সমষ্টি হলেও অর্থ ব্যাপক। সৃষ্টির পরিচালনার নিয়ম।ভারতীয় আধ্যাত্মিক জগতে তন্ত্র শব্দের অর্থ সাধনা। মুক্তি। রাজনৈতিক আবর্তে গণতন্ত্র বলতে বোঝায় কোনও রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থায় আইন প্রস্তাবনা, প্রণয়ন,ও নির্মাণের ক্ষেত্রে নাগরিকের সক্রিয় যোগদানের কথা বলা হয়েছে। আমেরিকার প্রাণপুরুষ প্রয়াত প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন বলেছিলেন, ডেমোক্রেসি অফ দা পিউপল, বাই দা পিউপল, ফর দ দা পিউপল। আবার সোভিয়েত রাশিয়ার প্রাণপুরুষ ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন ১৮৬৩সালের ১৯ নভেম্বর গেঠিসবার্গে দেওয়া এক ভাষণে বলেছিলেন, পুঁজিবাদী সমাজে আমরা পাই কাঁটা ছেঁড়া হতচ্ছাড়া জাল করা এক গণতন্ত্র। যা কেবল ধনীদের জন্য। অল্পাংশের জন্য।

আধুনিক গনতন্ত্রকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলছেন, মেজরিটি রুল বা গরিষ্ঠের শাসন। এই প্রসঙ্গে তিন বিদেশি সমাজবিজ্ঞানী টমাস হবস, লক ও রুশোর সামাজিক চুক্তি গণতন্ত্রের মূলমন্ত্রকে পুষ্টি যুগিয়েছে। অবশ্য এখনকার রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বর্তমান গণতন্ত্রকে  'এসডো ডেমোক্রেসি' বলছেন। যার অর্থ, 'কপট গণতন্ত্র'। বিশ্বে প্রথম গণতন্ত্রের দেশ গ্রিসের এথেন্স নগরী। সেখানকার এক দার্শনিক কাইলন ৪২২ সালে  বলেছিলেন, দ্যাট শ্যাল বি দা ডেমোক্র্যাট হুইচ শ্যাল বি দা পিউপল, ফর দা পিউপল। সম্ভবত লিঙ্কন সাহেব তাঁর বচনটি হয়ত এঁর কাছ থেকেই ধার নিয়েছিলেন।

ইংরেজ বিদায়ের পর  ২৫ অক্টোবর ১৯৫১ থেকে ২৯, ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ পর্যন্ত স্বাধীন দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটদাতার সংখ্যা ছিল ৪৪.৮৭ শতাংশ। মোট ৪৮৯ টি আসনের মধ্যে ৩৮৪ টি আসন লাভ করে কংগ্রেস সরকার গঠন করে মাত্র ৪৫শতাংশ ভোটের বিনিময়ে। অর্থাৎ মোট ভোটদাতার অধিকাংশই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিলেন। লোকসভার নির্বাচনে কোনোবারই শাসক দল ৫০শতাংশের বেশি ভোট পায়নি। ২০১৪  র বিজেপি ৮৯.৪৫ কোটি ভোটদাতার ৩১.৩৪ শতাংশ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় আসে। ২০১৯ এ  বি জে পি ৪৪.৯ শতাংশ ভোট পেয়ে আবার ক্ষমতা  দখল করেছে। অর্থাৎ দেশের ৫১শতাংশের ভোট এবারেও শাসক দল পায়নি।

এসবই ভারতের গণতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য। গণতন্ত্রের পতাকা ঘাড়ে নিয়ে দেশের জনগণের পদযাত্রা। অথচ মুখে লিউকোপ্লাস্ট লাগানো। শাসকদের বিরুদ্ধ সমালোচনা পছন্দ নয়। তাহলেই তাঁকে দেগে দেওয়া হয় দেশদ্রোহী হিসেবে। দক্ষিণপন্থী কট্টর হিন্দুত্ববাদী বর্তমান সরকার আসার পর থেকে দেশের নাগরিক ক্রমশ ধনী ও দরিদ্র এই বিভাজন ছেড়ে ধর্মীয় সংখ্যাগুরু আর সংখ্যালঘুর পরিচয়ে পরিচিত হচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী সমানতার কথা বললেও শাসকদলের উৎসাহী ছোট বড় নেতারা সে কথা মানতে রাজি নন। তাঁরা পরিষ্কার বলছেন,সংখ্যালঘু মানে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক। এদেশে তাঁদের থাকতে হলে সংখ্যাগরিষ্ঠের কৃপার ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে হবে। ভোটের প্রয়োজনে ললিপপ দেখানোর মত কিছু সুবিধা যখন কেন্দ্র বিরোধী রাজ্য সরকার দেয়, দেশের শাসক দল তখন বলে,সংখ্যালঘু তোষণ। অথচ সাচার কমিশনের রিপোর্ট পরিষ্কার বলেছে, স্বাধীনতার পর থেকে সংখ্যালঘুদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। রাজনৈতিক নেতারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেন। দেশের সংখ্যাগুরু উচ্চবর্ণীয় বুদ্ধিজীবীরা এবং মিডিয়ার বিচক্ষণ দেশভক্ত কর্তৃপক্ষও গণতন্ত্রের সম্পর্কে অনেক কিছু বলেন।অথচ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কোনও ধর্মীয় বা সামাজিক উৎসব নিয়ে এদের আশ্চর্য্যজনক নীরবতা অবাক করে। আসলে রাজনীতিতে ,সংস্কৃতিতে উচ্চবর্ণের আধিপত্য ভূমিপুত্রদের ব্রাত্য করেই রেখেছে। বিশেষ বিশেষ দিনে  ছৌনাচেই উচ্চবর্ণের বাঙালির সংস্কৃতি চর্চা আটকে আছে। স্বাধীনতার এত বছর পরেও সংখ্যালঘুদের উৎসবে তাই উচ্চবর্ণের বাঙালির যোগদান সমুদ্রে শিশির বিন্দুর মতই।

ধর্ম নিরপেক্ষতা নাকি ভারতের বৈশিষ্ট্য। অথচ সংবিধানে স্পষ্ট উল্লেখ, সরকারি ভবনে কোনও  অবস্থায় ধর্মীয় উপাসনাকেন্দ্র থাকবে না। কিন্তু দেশজুড়ে থানা,প্রশাসনিক ভবন,আদালতে মন্দির মসজিদের ছড়াছড়ি। গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি সমতা।ভারতীয় গণতন্ত্রের সংকটটি হলো এই যে, রাষ্ট্র সমতার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। সুশীল সমাজও সামাজিক ইস্যুগুলি মোকাবিলা করার মত ক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি। দিল্লির জে এন ইউর আধুনিক ইতিহাসের অধ্যাপক কে এন পানিক্কর তাঁর 'ডেমোক্রেসি ডেফিসিট' নিবন্ধে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। দেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন স্পটলাইট পত্রিকায় প্রকাশিত সেই নিবন্ধে পানিক্কর লিখেছেন,যেসব মোহাচ্ছন্নতাকে ব্রিটিশরা তাদের জাতীয় চরিত্রের  বৈশিষ্ট্য হিসেবে লালন করে থাকে নিজেদের সংশয়বাদী চেতনা আর আত্মনুসরণের দৃষ্টি দিয়ে সেগুলির একটি কথা বার্নাড শ অনেকবারই উল্লেখ করেছেন। ব্রিটিশদের নীতি বলতে তিনি আসলে যা বোঝাতে চেয়েছেন, তা হলো সুবিধাজনক কতগুলো অজুহাত। বাস্তব পরিস্থিতির চাহিদানুযায়ী এগুলোকে কখনও নিজেদের পক্ষে যেমন ব্যবহার করা হলো, তেমনই আবার প্রয়োজন দেখা দিলে বাতিলও করে দেওয়া হয়।,,,,

পানিক্কর লিখেছেন, গণতন্ত্র হচ্ছে একটি সামগ্রিক ধারণার বিষয়। এই উপাদানগুলোও একটি অপরটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তথাপি এর প্রধান তিনটি বৈশিষ্ট্য হিসেবে রাজনৈতিক , অর্থনৈতিক, এবং সাংস্কৃতিক সাম্যের কথা উল্লেখ করা যায়। এই তিনটি বৈশিষ্ট্য একত্রিত হলে একটি গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার জন্ম দিতে পারে। তবে সেই গণতন্ত্রের সাফল্য নির্ভর করছে উল্লেখিত সমতার বৈশিষ্ট্য তিনটি সেখানে কতটা গুরুত্ব পায় এবং সেগুলোর বাস্তবায়নই বা কতটা হয় তার ওপর। সুতরাং বলা যায় ,সমতার ধারণাটি সামাজিক ভাবে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে আছে ভারতের গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ।

ভারতীয় ভোটারদের প্রসঙ্গে পানিক্কর বলেছেন, সমাজের বিত্তশালী শিক্ষিত এবং ক্ষমতাবান অংশ থেকেই ভারতের শাসক রাজনৈতিক শ্রেণীর উদ্ভব ঘটেছে। পুরো রাজনৈতিক প্রক্রিয়াটিই এমনভাবে তাঁদের  কুক্ষিগত হয়ে আছে যে এখানে সমাজে গরীব ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর লোকেদের প্রবেশ করার সুযোগ নেই বললেই চলে।,,,,একথা অস্বীকার করার উপায় নেই , গণতন্ত্রের দুর্বলতাকে ধামাচাপা দিয়ে রেখে ঐতিহ্যকে মহান ও পবিত্র দেখাতে দলে বা পয়সা দিয়ে দলিত ও প্রান্তিক মানুষকে ভোট প্রার্থী করা হয়। গণতন্ত্রকে মর্যাদার মোড়কে মুড়তে

মুসলিম  বা দলিত প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি বা স্পিকার এর মত সম্মানীয় পদে বসানো হয়।

দেশে অধিকাংশ হিংসাত্মক ঘটনা এবং বিদ্রোহের পেছনেও কাজ করে নাগরিক অসন্তোষের ব্যাপার। অন্যদিকে রাষ্ট্রও এই অসন্তোষ জন্ম নেওয়ার কারণগুলোর সুরাহা না করে সামরিক শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে বিদ্রোহ দমনের পথ বেছে নেয়। ফলে জনগণের একটি বড় অংশ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যকারিতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এমন অবস্থা তৈরির কারণ, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির  সমন্বয় গড়ে ওঠেনি।

সদ্য সদ্য আদালতের নির্দেশমত রামমন্দির সমস্যার সমাধান হলো।ধর্মনিরপেক্ষতার শর্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হলেন রাম জন্মভূমিতে। শোনা যাচ্ছে ,কট্টর হিন্দুত্ববাদীরা এবার মথুরা ও কাশীর  মসজিদ ভেঙে মন্দির নির্মাণের আন্দোলনে নামছে। দাবি, এই মসজিদগুলো নাকি মন্দির ছিল। বাংলাতেও আওয়াজ উঠছে।  ধর্মনিরপেক্ষগোষ্ঠী বলছেন, হিন্দু আগ্রাসনে ইতিহাসের যে বৌদ্ধ মন্দিরগুলি হিন্দু মন্দিরে পরিবর্তিত হয়েছে সে ক্ষেত্রে কি হবে?

২০১৪ সালে বি জে পি ক্ষমতায় আসার আগে কথা দিয়েছিল ,বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। কিন্তু  কেন্দ্রীয় অর্থ দফতরের প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর স্বীকার করেছেন,দেশে কত কালো টাকা আছে সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কোনও তথ্য নেই। বোম্বে হাইকোর্টও এক রায়ে বলেছেন, কেন্দ্রের নোট বাতিল করে কালো টাকা উদ্ধারের নীতি ছিল ভ্রান্ত। আগামী দিনে ভারতের যে নতুন ইতিহাস লেখার প্রস্তুতি চলছে সেখানে আবার যে নতুন করে বিকৃতি হবে না তার কোনও গ্যারেন্টি কি আছে?

আমরা ইতিহাসে জেনে এসেছি, গান্ধীজির আন্দোলনেই দেশের স্বাধীনতা এসেছে। বিক্ষিপ্ত আন্দোলনের শহীদ হিসেবে জেনেছি ক্ষুদিরাম, সূর্য সেন, বিনয় বাদল,দীনেশের কথা। জেনেছি মঙ্গল পান্ডের কথা। অথচ ইতিহাসে স্থান পায়নি দলিত তিলকা মাঝির নাম। স্থান পায়নি প্রথম শহীদ  বিন্দি

তেওয়ারির কথা।

শিক্ষানীতির ব্যবস্থায় ভুল নীতিতে  দেশের ছাত্রসমাজ হয়েছে গিনিপিগ। এখন শুনছি , নতুন এক শিক্ষানীতি প্রয়োগ হবে। কতটা তা ছাত্রদের সহায়ক হবে তা ভবিষ্যতই বলবে। স্বাধীন দেশের নাগরিকের একটি প্রধান অধিকার খাদ্য। কিন্তু পরিকল্পনার সার্থক প্রয়োগ না থাকার কারণে মানুষের কোনও লাভ হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতিতে নাগরিক অধিকারের মিথ্যে ফানুস একদম চুপসে গেছে। দেশে খাদ্যের একটা অধিকার আইনের বইতে আটকে আছে। অবজ্ঞা আর উদাসীনতার কারণে খাদ্য নীতিতে যেমন প্রান্তিক মানুষ ব্রাত্য, তেমন তাঁদের বাসস্থানের নূন্যতম চাহিদাও পূরণ হয়নি। এরপর স্বাধীন দেশের নাগরিকদের প্রয়োজন স্বাস্থ্য। সরকারি পরিকাঠামোর নগ্ন রূপটা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে করোনা আবহে। চিকিৎসা এখন পণ্য। ফেলো কড়ি ,মাখো তেল। বেসরকারি হাসপাতাল এখন কসাইখানা। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় প্রশাসন লোক  

 দেখানো কড়া কথা বললেও আসলে কোথাও যেন প্রশাসন ও বেসরকারি স্বাস্থ্য বেওসায়ীদের গোপন আঁতাতের ছবি ফুটে উঠছে । বেসরকারি স্বাস্থ্য বেওসায়ীরা আদালতে গিয়ে সময় কিনে বেঁচে যাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় শাসক দল যেখানে পশ্চিমবঙ্গে একটি পোস্ট, বাকি ল্যাম্পপোস্ট বলে গাল পাড়েন ,সেখানে অমিত মোদি জুটি তার চেয়ে যে অন্যরকম তেমন প্রমাণ কিন্তু রাখতে পারেননি।এই মুহূর্তে শীর্ষ আদালতের আবেদন জমা পড়েছে হিন্দু রাষ্ট্রের আবেদন জানিয়ে। শেষ পর্যন্ত রামরাজ্য প্রতিষ্ঠিত হতে চলেছে কিনা বোঝা যাবে আগামীদিনে। এদিকে দেশে কিছু নিন্দুক বলেন,১৯৪৭ এ ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীন হলো কি করে? ব্রিটিশ শাসক ষষ্ঠ জর্জ ভারতের সর্বোচ্চ পদ গভর্নর জেনারেল ছিলেন ব্রিটিশ লর্ড মাউন্টব্যাটেন। ১৯৪৮ এ চক্রবর্তী রাজাগোপালচারী ওই পদে শপথ নেন, রাজা ষষ্ঠ জর্জ ও তাঁর পরিবার,উত্তরাধিকারীদের প্রতি বিশস্ত্ব দায়বদ্ধ থাকার অঙ্গিকার নিয়ে। দুই  ডমিনিয়ন ভারত ও পাকিস্তান বিভক্ত করা হয়েছে এমন সনদ পত্রই আছে। অর্থাৎ উপনিবেশ।উপনিবেশ স্বাধীন আর সোনার পাথর বাটি নাকি একই কথা। ১৫ আগস্ট দিনটি ব্রিটিশ শাসক বেছে নেওয়ার কারন, ১৯৪৫ এ জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্র শক্তির কাছে আত্মসমর্পণ করে । দিনটি ব্রিটিশের কাছে গর্বের দিন। এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই ব্রিটিশের সিদ্ধান্ত। সুতরাং দেশের সঙ্গে এই দিনটির তাৎপর্য কতটা? বিতর্কের অবসান ঘটানোর দায়িত্ব তো দেশের শাসক ও প্রধান বিরোধী দলের । এই প্রশ্নের উত্তরটা কি অধরাই থেকে যাবে?

No comments:

Post a Comment