পৃথিবীর করোনা সংকট পর্যবেক্ষণে ভিনগ্রহীরা? - Songoti

পৃথিবীর করোনা সংকট পর্যবেক্ষণে ভিনগ্রহীরা?

Share This
সুজিৎ চট্টোপাধ্যায়: করোনা অতিমারী ছাড়া নতুন কোনো খবর নেই। উদ্বেগ আর হতাশার মধ্যে ইরফান খানের হঠাৎ প্রয়াত হওয়ার খবরটিতে মানুষ আরও মানসিক চাপে আক্রান্ত। এই সব খবরের মধ্যে ছোট্ট একটা খবর হয়ত অনেকেরই নজর এড়িয়ে গেছে। কিছু মানুষ অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছেন,কিন্তু গুরুত্ব দেননি।অথচ সংবাদটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এই প্রথম মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর স্বীকার করেছে , পৃথিবীর বুকে দেখা গেছে আন আইডেন্টিফায়েড এরিয়েল ফেনোমেনা। অর্থাৎ কল্প বিজ্ঞানের দৌলতে পাঠক যাকে ইউএফও নামে জানে।
২৭ এপ্রিল পেন্টাগন তিনটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের তিনটি ভিডিও আনুষ্ঠানিকভাবে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করে। পেন্টাগন জানায়, ভিডিও তিনটির একটি ২০০৪ সালের নভেম্বর মাসে তোলা। অন্য দুটি ২০১৫সালের জানু়য়ারি মাসে তোলা।অভিজ্ঞমহলের ধারণা, বরাবরের মত পেন্টাগন বা নাসা ভিনগ্রহীরা অস্তিত্ব নিয়ে যে কোন প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু এবার তা সম্ভব  না হওয়ায় স্বীকার করতে বাধ্য হতে হয়েছে। কি সেই কারণ?
আসলে ভিনগ্রহী সম্পর্কে যে কোন তথ্য আমেরিকা আনক্লাসিফায়েড তথ্য হিসেবে বিবেচনা করত। কিন্তু এই তিনটি ভিডিও কোনোভাবে ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়ে যায়। যাঁরা যাঁরা এই ভাইরাল হওয়া ভিডিও ক্লিপ দেখেছেন, তাঁদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে শুরু করে।পেন্টাগনের পক্ষে সম্ভব হয় না বিষয়টি ফেক বলে উড়ি য়ে দেওয়া। ফলে স্বীকার করতে বাধ্য হয় পেন্টাগন।প্রশ্ন কি আছে ওই ভিডিও ক্লিপে?


ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে  উড়ন্ত চাকি সমান্তরাল সরল রেখা বরাবর পশ্চিম প্রান্ত থেকে দক্ষিণ প্রান্তে  উড়ে যাচ্ছে। পেন্টাগন স্বীকার করেছে এটি ভিনগ্রহীদের যান হলেও হতে পারে। স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ মানুষের কৌতূহল ,এই মুহূর্তে করোনা কবলিত পৃথিবীতে কি ভিনগ্রহীরা লক্ষ্য রাখছে? তারা কি আমাদের সাহায্য করবে না এই ভাইরাস তারা ছড়ালো? যদিও মানুষের এই প্রশ্নের এই মুহূর্তে কোনো উত্তর নেই।
সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন নাসার জেট প্রপালশান  ল্যাবরেটরির সিনিয়র বিজ্ঞানী গৌতম চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মহাকাশ নিয়ে গবেষণাতেই পৃথিবীর দেশগুলির প্রচুর খরচ হয়।এরপর অন্যগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা গবেষণা করার মত অর্থের সংস্থান করা খুবই কঠিন। বিভিন্ন দেশ যদি যৌথ ভাবে কাজ করে তবেই সম্ভব। ফলে গৌতম বাবুর কথাতেই স্পষ্ট ভিনগ্রহীদের নিয়ে যেভাবে গবেষণা করা উচিত তা হচ্ছে না। বিশ্বের দেশগুলির যৌথ গবেষণার কথাও সোনার পাথর বাটির মত। কেননা দেশগুলির মধ্যে কূটনৈতিক জটিলতা এবং পারস্পরিক সাফল্যের ইঁদুর দৌড় অন্যতম কারণ। কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়।তবে দেশবিদেশের বিজ্ঞানীরা এই দাবিতে সোচ্চার হচ্ছেন। বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, সৌরমণ্ডলের সবথেকে কাছের নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টা উরিতে একটি বিমানে চড়ে পৌঁছতে সময় লাগবে তা হলো প্রায় ৪.৪মিলিয়ন বছর অর্থাৎ ৪০ লক্ষ বছরের ও বেশি। ফলে এই গবেষণায় যে খরচ তা কোনও এক দেশের পক্ষে খরচ করা সম্ভব নয়।সুতরাং যৌথ গবেষণা দরকার। ভিনগ্রহীদের অস্তিত্ব আছে  সেই দাবিকে জোরালো করে তোলেন প্রথমে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ওয়ং হো চি। তিনি ছাত্রদের এক সেমিনারে বলেন,এই পৃথিবীতে পৌঁছে গেছে ভিনগ্রহীরা। পৃথিবীর জলবায়ুর সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে রূপ পরিবর্তনে কুশলী এই ভিনগ্রহীরা মানুষের সঙ্গেই প্রজনন ঘটাচ্ছে। আমরা বুঝতে পারছি না। এই বিষয়ে অধ্যাপক হাইব্রিড প্রোডাকশন ও এলি য়েনস্ ভিসিটেশনস্ অ্যান্ড অফ হিউম্যানিটি  নামে দুটি  বইও লিখেছেন। আর একজন হলেন ব্রিটেনের প্রথম মহাকাশচারী হেলেন শারম্যান। ১৯৯১সালে রসায়নবিদ হেলেন মাত্র ২৭বছর বয়সে স্পেস মিশনে যান। তিনি বলেন,মহাবিশ্বে কোটি কোটি গ্রহ তারা আছে।সেখানে কোথাও ভিনগ্রহী থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। হয়ত তারা আমাদের মত কার্বন, নাইট্রোজেন দিয়েই তৈরি। আবার অন্য কোনো উপাদানও হতে পারে। বোধবুদ্ধির ব্যাপারে তারা আমাদের থেকে উন্নত বলেই মনে করি। এই দুই ব্যক্তিত্বের বক্তব্যে বিজ্ঞানী মহলে সাড়া পড়লেও কোনো রাষ্ট্র গুরুত্ব দেয়নি।
কিন্তু বাজারে জোর চর্চা, মার্কিন সেনা বাহিনীর এক গোপন কেন্দ্র আছে, যার নাম এরিয়া ফিফটি ওয়ান ডিগ্রি। সেখানে নাকি প্রেসিডেন্ট ও কিছু বিজ্ঞানী ছাড়া কারও প্রবেশ নিষিদ্ধ।অনুমান, সেখানে কিছু মৃত ও কিছু জীবিত ভিনগ্রহী রাখা আছে। এলাকাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা প্রদেশের বিরান মরুভূমির এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। আমেরিকার বহু মানুষ ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর মাসে এই গুপ্তস্থানে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু প্রশাসন সে চেষ্টা রুখে দেয়।কিন্তু সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিজ্ঞানীরাও কৌতূহলী এই ভিনগ্রহীদের অস্তিত্ব আছে কি না জানতে।সংবাদে প্রকাশ,  ইতিমধ্যে টেলিস্কোপে কিছু সংকেত ধরা পড়েছে। ২০১৭তে প্রথম ধরা পড়ে নভেম্বর মাসে। তারপর ২০১৯ এর জানুয়ারিতে।কানাডার টেলিস্কোপে যে সংকেত ধরা পড়েছে, বিজ্ঞানীরা বলছেন সেটি প্রায় ১৫০কোটি আলোকবর্ষ দূরের। এই রেডিও সিগন্যালকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ফাস্ট রেডিও বাস্টস্। যদিও সেই সংকেতের মর্ম এখনও বিশ্বের বিজ্ঞানীরা উদ্ধার করতে পারেনি। কিছু বিজ্ঞানীদের বক্তব্য , আলোর গতিবেগ ও শব্দের গতিবেগের হিসেব অনুযায়ী আমরা নিজেদের যে প্রতিকৃতি আয়নায় দেখি তাও টাটকা নয়। বেশকিছু ন্যানো সেকেন্ড সময়ের পর আমরা দেখি। তেমনই ভিনগ্রহীরা বহু দূর থেকে যদি  পৃথিবী  দেখেও থাকে দেখবে অতীতের পৃথিবী। এমন হতে পারে তারা দেখছে ডাইনোসরের যুগ। সুতরাং আজকের পৃথিবী দেখতে তাদের সময় লাগবে লক্ষ কোটি বছর।
ভারত গত বছর যখন আমার ন _২, পাঠায়, তখন বলা হয় চাঁদের অন্ধকারময় পিছন দিকে যান অবতরণ করবে।কেননা চাঁদের পিছন প্রান্তে আজ পর্যন্ত কোনও মহাকাশযান যায়নি। কারণ যা বেশ কষ্টকর। কিন্তু বিজ্ঞানীদের ধারণা , যে কথাটি গোপন রাখা হয় তা হল দ্বিতীয়  ভারতের চন্দ্রাভিযান 
শুধু চাঁদের ওপর গবেষণা করবে তা নয়, আগামীদিনে চাঁদকে ঘাঁটি করে অন্য গ্রহে ভিনগ্রহী আছে কিনা তাও দেখবে। এই ধারণা আমাদের ইসরো অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ডিরেক্টর অরূপ দাশগুপ্ত।
সবচেয়ে মারাত্বক দাবি করেছেন নাসার এক নভোচর বিজ্ঞানী ক্লার্ক মেকলেল্যান্ড।তিনি আমেরিকার স্টার গেট ক্রনিকল নামের এক ওয়েব সাইটে লেখেন, ভিনগ্রহীদের একটি দল যারা এলিয়ন নামে পরিচিত , তারা নাসায় এসে নাসার বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেছেন।এদের উচ্চতা ৮/৯ ফুট।মানুষের মতোই দুটি হাত,দুটি পা,পায়ের তালু। মাথা সামান্য হলেও দেহের তুলনায় বড়।বিজ্ঞানী ক্লার্ক ৩৫বছর নাসায় কাজ করেছেন। তিনি বলেছেন, পৃথিবীতেই বহু ভিনগ্রহী গবেষণা চালাচ্ছেন। নাসা অবশ্য এই ওয়েবসাইট টি তুলে নিয়েছে। তবে কি এই বিজ্ঞানীর মস্তিষ্ক বিকৃতি ঘটেছে? এরও কোনও জবাব দেয়নি নাসা।
আকাশে উড়ন্ত চাকি দেখার দাবি অনেক বছর আগে থেকেই করছেন কিছু মানুষ।বিষয়টি নিয়ে তৈরি হয়েছে বেশ কিছু গল্প ও সিনেমা। জুলেভার্নের নাম আমরা কে না জানি ? নাসার সর্বশেষ ঘোষণা , নতুন আবিষ্কৃত গ্রহের সংখ্যা প্রায় বারোশো। এর মধ্যে ৫৪ টি গ্রহ আছে যা পৃথিবীর আয়তনের সমান।সেখানে ভিনগ্রহী থাকলেও থাকতে পারে। তবে ইকারুস ও জিও ফিজিক্যাল  এ প্রকাশিত দুটি গবেষণা প্রবন্ধে বলা হয়েছে, শনি গ্রহের বড় উপগ্রহ টাইটানে এলিয়েন এর অস্তিত্ব থাকতে পারে। বহু বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, আমেরিকা যদি তাদের গোপন ডেরায় ভিনগ্রহীদের নিয়ে একসঙ্গে গবেষণা চালাচ্ছে,আর সেই ভিনগ্রহীরা যদি আমাদের চেয়ে উন্নত হ য়ে থাকে, তাহলে এখনও করোনা ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারছে না কেন? কেনই বা নিজের দেশকে ভাইরাস থেকে বাঁচাতে পারছে না কেন? সত্যি কি ভিনগ্রহীরা আমাদের মধ্যে ছদ্মবেশে লুকিয়ে আছে? যদি তাই হয়,তাহলে সেই ভিনগ্রহীরা আমাদের বন্ধু না শত্রু? এসব প্রশ্নের কোনও জবাব এখনও বিজ্ঞানীরা দেননি। তাই ভিনগ্রহীদের অস্তিত্বের কথা এখনও শুধুই চর্চার বিষয়ই হ য়ে থাকছে।

No comments:

Post a Comment