দেবাশিস ঘোষ , চাঁচল : জটিল অস্ত্রোপচারে ফের সাফল্য মিলল | মালদহের চাঁচল সুপারস্পেশ্যালিটি হাসপাতালের ঘটনা | রেনুকা বিবি নামে এক গর্ভবতী মহিলার জটিল অস্ত্রোপচার করে সদ্যোজাত শিশু সহ তাঁর জীবন ফিরিয়ে দিলেন ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সূত্র থেকে জানা গেছে , মা ও শিশু দুজনেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন | তারা সুস্থ রয়েছেন | বুধবার রাত দশটা নাগাদ জটিল অস্ত্রোপচারটি হয় এই হাসপাতালে। ওই হাসপাতালে গর্ভবতী মহিলার এমন জটিল অস্ত্রোপচার প্রথম হয়েছে বলে দাবি কর্তব্যরত চিকিৎসকদের।
চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা যায় , চাঁচল -১ ব্লকের ভগবানপুর গ্রামের বাসিন্দা রেনুকা বিবি (১৯) সোমবার প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে ওই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন | চিকিৎসকদের কথায় , চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর আশা করা গিয়েছিল স্বাভাবিকভাবেই প্রসবের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম দিবেন রেনুকা বিবি | কিন্তু তাঁর জরায়ুতে সদ্যজাত আটকে গিয়েছিল । পরে চিকিৎসায় তা ধরা পড়ে। বুধবার ওই মহিলার অবস্থা সংকটজনক হয়ে পড়ে। চিকিৎসকেরা দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে এই জটিল অস্ত্রোপচারটি করেন। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলা অস্ত্রোপচার করার পরই সাফল্য মেলে চিকিৎসকদের। জন্ম হয় সদ্যোজাত শিশু কন্যার। মাও বিপদমুক্ত হন |
চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ সৌমেন চৌধুরী বলেন , " ওই গর্ভবতী মহিলার স্বাভাবিকভাবেই সন্তান জন্ম দেবেন এটাই আশা করা হয়েছিল। কিন্তু বুধবার সন্ধ্যা থেকেই তাঁর যন্ত্রণা শুরু হয়। পরীক্ষা করে দেখা যায় জরায়ুতে আটকে রয়েছে সদ্যজাত। মুহূর্তের মধ্যেই মেডিকেল বোর্ড তৈরি করে শুরু হয় অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি। তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। সুস্থ এবং স্বাভাবিক অবস্থায় কন্যা সন্তানের জন্ম হয়েছে । ওই মহিলাও সুস্থ রয়েছেন। তিনি আরও বলেন, " এরকম ঘটনা প্রতি ১ লক্ষ গর্ভবতী মহিলার মধ্যে ২-৩ জনের দেখা যায় । চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে এই প্রথম এরকম রোগীর অস্ত্রোপচার হল | আর তাতে সাফল্যও মিলেছে।
চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সুপার সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন , " রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে গ্রামীণ চিকিৎসা পরিষেবার যে উন্নয়ন হয়েছে তার একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের এই ঘটনা। বিভিন্ন গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষদের চিকিৎসার জন্য বাইরে ছুটে যেতে হয় না। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা মান এখন অনেক উন্নত। "
: Advertisement :
রেনুকা বিবির পরিবারের সূত্র থেকে জানা যায় ,বছর দুই আগে ভগবানপুরে গ্রামে তাঁর বিয়ে হয় | স্বামী সামিরুল সেখ পেশায় দিনমজুর। অত্যন্ত গরীব পরিবার | চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতাল একমাত্র ভরসা | সরকারি হাসপাতালে জটিল অস্ত্রপচারের পর শিশু কন্যার জন্ম দিয়ে সুস্থ রয়েছেন তিনি | রেনুকা বিবির মা সাবা বিবি চিকিৎসকদের দুহাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন | তিনি বলেন , " মেয়ে বেঁচে ফিরেছে | নাতনীও সুস্থ আছে | ডাক্তারবাবুদের আশীর্বাদ করছি। তারা যেন সুস্থ থাকেন | আল্লাহর কাছে তাঁদের জন্য দোয়া করছি।"
No comments:
Post a Comment