কলকাতা : রথযাত্রার সূচনা হয় পুরীতে। পুরীর জগন্নাথ ধাম রথের সময় ভক্ত সমাগমে ভরে ওঠে। কিন্তু, কলকাতা ও কোন অংশে পিছিয়ে নেই। কলকাতায় বিভিন্ন সংস্থার তরফ থেকে রথযাত্রা পালন করা হয়। ঠিক সেই রকমই একটি সংস্থা "শ্রী জগন্নাথ সেবা সমিতি"।
সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে জগন্নাথ সেবা সমিতির সাংস্কৃতিক শাখা উড়িষ্যা উৎসবের ও রথ থেকে উল্টো রথের অনুষ্ঠানসূচি প্রকাশ করলেন | ২০ জুন খিদিরপুরের জগন্নাথ মন্দির থেকে শুরু করে ভবানীপুরের নর্দার্ন পার্ক পর্যন্ত একটি বর্ণাঢ্য রোড শো (রথযাত্রা) দিয়ে এই উৎসব উদযাপন শুরু হবে, যেখানে ২৮ জুন সকাল পর্যন্ত দেবতারা বিরাজমান থাকবেন। রোডশো`তে পুরুলিয়া`র ছৌ নাচের দল এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও ভারত সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার বিভাগ দ্বারা স্পনসর করা শ্রী খোলা টিম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে।
২০০৩ সাল থেকে প্রতি বছর শিল্প ও সংস্কৃতিতে অসামান্য অবদানের জন্য উৎকলা সম্মান প্রদান করা হয়ে আসছে। এই বছর বিশিষ্ট ওড়িয়া গায়ক শ্রী দেবাশিস মহাপাত্রকে এই সম্মানে ভূষিত করা হবে। অন্যান্য সুপরিচিত শিল্পীদের সঙ্গে তিনি সঙ্গীত পরিবেশনও করবে।
উৎকলা`র সভাপতি শ্রী কাশীনাথ বেহেরা (অবসরপ্রাপ্ত আইএএস) এই বিষয়ে আরও বিশদভাবে বলেন, এই উৎসবে “জগন্নাথ ইন বেঙ্গল আইজ” বইটি ছাড়াও উৎকল স্যুভেনির এবং ঝুমারের অ্যালবাম উদ্বোধন করা হবে। ওড়িশা উৎসবের আট দিনে, ময়ূরভঞ্জের প্রজেক্ট ছাউনি ছৌ নৃত্য পরিবেশন করবে এবং রায়রংপুরের শ্রী সুভাষ পাত্র ও সম্প্রদায়ের সদস্যরা ঝুমুর গান পরিবেশন করবেন। এছাড়াও, ওড়িশা সরকার দ্বারা স্পনসরকৃত নবজীবন নাট্যশাস্ত্রের একটি শাস্ত্রীয় নৃত্য পরিবেশিত হবে। শ্রীমতী মীরা দাস ও সম্প্রদায়ের নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। সেইসঙ্গে পরিবেশিত হবে ওক-এর শিল্পীদের ভজন সন্ধ্যা অনুষ্ঠান।
২৫ জুন শহরের বিভিন্ন স্কুলের শিশুদের মধ্যে ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য প্রতিযোগিতা ছাড়াও, বিশিষ্ট ভজন শিল্পী ও বলিউড গায়িকা সাধনা সরগম এবং তাঁর দল ২৫ তারিখ সন্ধ্যায় একটি ভজন সন্ধ্যা পরিবেশন করবেন। এদিন ঐতিহ্যবাহী খিরি-পিঠা প্রতিযোগিতাও অনুষ্ঠিত হবে।
উৎসব সম্পর্কে ইতিবাচক বিষয় তুলে ধরতে গিয়ে, কলকাতা পুর নিগমের ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, নর্দার্ন পার্কের শ্রী অসীম কুমার বসু বলেন, “আমি অত্যন্ত উচ্ছ্বসিত যে এই বছর ওড়িশা উৎসব আমাদের এলাকায় হচ্ছে৷ রথযাত্রার দিন ভগবান জগন্নাথ, বলভদ্র এবং দেবী সুভদ্রা নর্দান পার্কে ৯ দিন থাকার জন্য আসছেন। রথযাত্রার পর আমরা আমাদের এলাকায় একটি মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা করছি। ঈশ্বরের আশীর্বাদে আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে এখানে ওই মন্দিরটি নির্মিত হবে। আমরা গত বছর কাজ শুরু করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু যেমন বলা হয়, আপনি যেতে পারবেন না এবং ঈশ্বরের কাছে আশীর্বাদ চাইতে পারবেন না, যতক্ষণ না তিনি আপনাকে ডাকেন। অবশেষে, আমি মনে করি সর্বশক্তিমান এই বছর নর্দার্ন পার্কে আসতে রাজি হয়েছেন। এই ওয়ার্ডের মানুষের জন্য এটি একটি বড় আশীর্বাদ এবং আমি চাই প্রত্যেকে তাদের হৃদয়ের গভীর শ্রদ্ধা থেকে প্রভুর কাছে আশীর্বাদ চেয়ে নিক।
২৭ জুন, ২০২৩-এ সমাপ্তি অনুষ্ঠানটি পুরস্কার বিজয়ীদের পরিচিতি`র মাধ্যমে শুরু হবে। এরপর পরিবেশিত হবে পুরস্কার বিজয়ীদের নৃত্যানুষ্ঠান।
No comments:
Post a Comment