বিশ্বকবির ভাবনায় | চঞ্চল রায় চৌধুরী | সাহিত্যগ্রাফি - Songoti

বিশ্বকবির ভাবনায় | চঞ্চল রায় চৌধুরী | সাহিত্যগ্রাফি

Share This


পরাধীন ভারতবর্ষে মহান কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জমিদারি বংশে থেকেও তাঁর কাব্য ও সাহিত্য প্রেম হতে বিচ্যূত হতে দেখা যায়নি ।দীর্ঘ সত্তর বৎসর ব্যাপী রচিত কাব্য ,সাহিত্য ,সঙ্গীত ,নাটক প্রভৃতি নিদর্শন তাঁর সাহিত্যানুরাগের চরমতম ক্ষমতার প্রামাণ্যস্বরূপ বৈ অন্যকিছু নয় । রবীন্দ্রনাথের বৈষয়িক দিকটাও বেশ উল্লেখযোগ্য চারিত্রিক গুণের পরিচয় দেয় । যৌথ পরিবারে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কনিষ্ঠ পুত্র হিসেবে তাঁর বিষয় ভাবনা অবহেলিত হবার নয় । জমিদারীর আয় যে সংসারের ভরনপোষণের একমাত্র উপায় সচেতন দৃষ্টিভঙ্গিতে রবীন্দ্রনাথ তা উপলব্ধি করেছিলেন ।এবং তার গুরুত্ব বুঝতেন । তা যথাযথ পালন ও করতেন । তাঁর প্রখর বাস্তববুদ্ধি দিয়ে ছোট বড় অনেক বৈষয়িক সমস্যার সমাধান করে ফেলতেন ।
সমাজ সংস্কারক রবীন্দ্রনাথ তাঁর সূক্ষ্ম দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সমাজের ন্যূনতম চাহিদাগুলি মেটাতেন ।নানান উৎসব ও কর্মকান্ডের প্রসার তার সাক্ষ্য বহন করে । শান্তিনিকেতনের আশ্রম পরিচালনা করা ,১৯১৯ সালে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করে তাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করা অন্যতম শ্রেষ্ঠকর্ম নিঃসন্দেহে । এর মধ্যে দিয়ে তিনি পাশ্চাত্যের সাথে অদ্ভূত মিলন ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন ।বিশ্বের প্রতিটি কোণের মানবের পক্ষে তাঁর প্রতিষ্ঠানে আনাগোনা সহজ হয়েছিল ।তাইতো বিশ্বকবির প্রেম দেশে দেশে সুজলা সুফলা শস্যভূমিতে ,নিবিড় অরণ্যে পাতার মর্মর শব্দে ধ্বনিত হয় ।
পঁচিশে বৈশাখ দিচ্ছে ডাক বিশ্বকবির ভাব মধুর চেতনায় এই পাহাড় মরু নদী আকাশ বাতাস সুনীল সাগর সমগ্র বিশ্ববাসী জেগে থাক । কবির ভাবনায় গৃহের অন্ধকোণে একমনে জপলে ঈশ্বরকে খুঁজলে তা হবে বৃথা চেষ্টা মাত্র ।পথের ধূলায় সৃষ্টিমাঝে যেথা শ্রমিক মজুর কৃষক মুটে ঘর্ম ঝরায় পাবে সেই মাটির 'পরে ।
তাই জগৎমাঝে আনন্দযজ্ঞে কবির বিশ্বভরা প্রাণের আমন্ত্রণ । দিকে দিকে আপনাকে মিলায় মানব ঈশ্বরকে জাগিয়ে তোলার অভিপ্রায়ে । নাই ভেদাভেদ ধর্মে বর্ণে দেহ মনে শ্রেষ্ঠজীবের একাত্ম হবার আহ্বান শুনি । আপন হতে বাইরে দাঁড়ালে বিশ্বলোকের সাড়া মিলবে । 

No comments:

Post a Comment